🎯Hypothyroidism🎯
আপনার ওজন ৮৫ কেজি। হঠাৎ মনে হলো অনেক হয়েছে। এইবার কমাতে হবে। শুরু হলো ডায়েটের উপর জুলুম। ইউটিউব, ফেসবুক, গুগুল নানাবিধ অখাদ্য কুখাদ্য বস্তা পচা সেলেব্রিটির অপরিকল্পিত ডায়েট চার্ট দেখে শুরু হলো একশন। এই ডায়েট লিস্ট এ সারাদিন ব্যাপি যা আছে তা যোগার করা বা মনে রাখতে আরো দুই জন এসিস্ট্যান্ট লেগে যায়।।সেই সাথে ডুবাই এর খেজুর, উগান্ডার বাদাম, ইউএসএর সাপ্লিমেন্ট তো আছেই।
কিন্তু না হচ্ছেনা। ওজন খুব বেশি কমছেনা। উলটো আরো মারাত্মক ক্লান্তি। সাড়াদিন ঝিমঝিম ভাব।
শীত শেষ। গ্রীষ্মের কাঠফাটা রোদ। তবুও গায়ে কাথা জড়িয়ে নাক ডেকে ঘুম। মন মেজাজের বারোটা বাজা অবস্থা। মুড টুইস্টেড। পিরিয়ড এলোমেলো।
এই অবস্থা গুলো হর হামেশাই ঘটছে। আর এইটাকে হাল্কা করে নেয়ার কোন সুযোগ নেই।
তার মানে থায়রয়েড গ্ল্যান্ড। আমাদের গলার সামনের দিকে একটা গ্ল্যান্ড থাকে। যা আমাদের শরীরের অনেক অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজের সাথে জড়িত। কোন কারনে যদি এই গ্ল্যান্ডে এর এক্টিভিটি কমে যায় তাহলে থায়- রয়েড নামের একটা হরমোন কম তৈরি হয়।
আল্টিমেটলি এই হরমোন কম জনিত উপসর্গ গুলো চলে আসে। এই অবস্থা তাকে বলে হাইপোথায়রইডিজম।
✅এর লক্ষন গুলো কি?
👉অল্প খাচ্ছেন কিন্তু অস্বাভাবিক মোটা হয়ে যাচ্ছেন
👉ক্লান্তি,অবসাদ, অল্পতেই হাপিয়ে উঠা
👉সাড়াদিন ঘুম ঘুম লাগা
👉ঠান্ডা আবহাওয়া সহ্য করতে না পারা। যেমন গা এ শীত শীত লাগা আর গরমেও গায়ে কাথা জড়িয়ে থাকা
👉শরীরে চর্বি জমে যাওয়া
👉মুড ভালো না থাকা। মানে ডিপ্রেসন এ যাওয়া
👉গা এর চামড়া শুকনা শুকনা লাগা
👉পিরিয়ড এলোমেলো হয়ে আসা( অনিয়মিত ও বেশি ব্লিডিং হওয়া)
👉প্রেশার বেড়ে যাওয়া
👉হার্ট বিট কমে আসা
👉কাজে কর্মে স্লো হয়ে আসা
👉মেমোরি কমে আসা
👉গলার স্বর হাস্কি হয়ে আসা
👉সেক্সুয়াল ড্রাইব কমে যাওয়া
👉গর্ভধারণ এ সমস্যা হওয়া
আরো অনেক ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে।
✅কিভাবে রোগ নির্নয় করস হয়ে থাকে?
🎯উপরিউক্ত উপসর্গ গুলো থাকলে আর সেই সাথে
🎯কিছু ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা করা হয়ঃ
১. গলায় থাইরয়েড গ্ল্যান্ড বড় হয়ে যেতে পারে
২. মুখ ফোলা ফোলা লাগা( পাফি ফেইস)
৩. মাংশ পেশী দুর্বল হয়ে যেতে পারে যার ফলে বসা থেকে দাড়াতে কষ্ট হতে পারে
৪. পা এর জার্ক( বিশেষ ধরনের ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা) দেখা হয়ে থাকে
🎯ব্লাড টেস্টঃ
১. থায়রোয়েড ফাংশন টেস্ট( TSH, FT3, FT4)
২. থায়রয়েড এন্টিবডি টেস্ট
🎯ইমেজিংঃ
১. আল্ট্রাসনোগ্রাম থায়রয়েড গ্ল্যান্ড
✅চিকিৎসা?
💊এন্টি থায়রয়েড ড্রাগ যেমন থায়রক্সিন
মানে বাইরে থেকে কমে যাওয়া হরমোন ট্যাবলেট আকারে খেতে হয়।
✅কত দিন খেতে হয়?
সারাজীবন ই ওষুধ খেতে হবে। মাঝে মাঝে হরমোন লেভেল মেপে দেখতে হয়। সচরাচর ৬-১২ মাস পর পর। এবং ওষুধ এর ডোজ এদিক সেদিক করতে হয়।
✅সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা না নিলে কি হবে?
১. হার্ট এর সমস্যা যেমন হার্ট বড় হয়ে যাওয়া, হার্ট ফেইলুর, হার্ট এর পর্দায় পানি আসা
২. নার্ভ এর সমস্যা যেমন নিউরোপ্যাথি
৩. বন্ধাত্ব্য
৪. মানসিক সমস্যা যেমন ডিপ্রেসন
৫. বিকালংগ সন্তান এর জন্ম দেয়া যেমন ক্রিটিন বেবি
৬. ফ্যাটি লিভার
৭. মাংসপেশি সমস্যা যেমন মায়োপ্যাথি
আসুন জানি, জানাই। সচেতন হই, করি।
থায়রয়েড এর সমস্যা অনেক অনেক হারে বেড়ে গিয়েছে। সঠিক সময়ে সঠিক ভাবে এই রোগ নির্নয় করে চিকিৎসা নেই ও সুস্থ ভাবে বেচে থাকি।