📌📌কিছু কথা, গল্প ও বার্তাঃ
💊💊ধরুন আপনার হাল্কা জ্বর, সর্দি, কাশি। একদিনেই অতিষ্ঠ হয়ে দৌড়ে গেলেন ফার্মেসি তে। ধরিয়ে দিলো Tab. Azithromycin. দুই দিন খেয়েই বন্ধ। সর্দি কাশি ক্লিয়ার। এইখানে ওষুধের কোন কারিকুরি ছিলোনা। ভাইরাল জ্বর একাই ভালো হয়ে গিয়েছে। নাম হয়েছে এই ওষুধ এর।
💊💊আবারো ধরুন আপনার পিচ্চির নাক দিয়ে পানি পরছে, হাল্কা শ্বাষ কষ্ট। দৌড়ে গেলেন পল্লী চিকিৎসক এর কাছে। উনি ধরিয়ে দিলেন Syrup Ceftibuten( latest antibiotic এই গ্রুপের) দুই ফাইল। চার দিন খেয়েই বন্ধ। বাচ্চা ও কিছুটা ভালো।
💊💊ধরুন আপনার মধ্যবয়সী মেয়ের গায়ে লেগে লেগে জ্বর ভাব। ক্ষুদা মন্দা। গেলেন অতি নগন্য জানাশুনা স্যাকমোর কাছে। দিলেন Typhoid ধরার জন্যে Widal test. আসলো পজিটিভ। ধরায় দিলেন Injection Ceftriaxone 2gm করা ১৪ দিন। সাত দিন দেয়ার পরেই বন্ধ। টাকার সমস্যা।
ফলাফলঃ
⚠️মশা মারতে কামান দাগাতে গিয়ে কামানের উলটো ব্যাবহার আর সেই সাথে প্রয়োজনে কামানের গোলা নেই।
⚠️উপরের তিনটি ঘটনায়ই ইর্যাশিওনালি মানে অযাচিত এন্টিবায়োটিক এর ব্যাবহার হয়েছে। এতে করেঃ
🎯এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স হচ্ছে। মানে আক্রমণ কারী ব্যাকটেরিয়া গুলো এমন রুপ ধারন করে যে তাদের সাথে ফাইট করে মেরে ফেলা মারাত্মক কঠিন হয়ে যায়। ফলে অল্প অসুখেই বেশি ভোগান্তি।
🎯 যে হারে রেজিস্ট্যান্স হচ্ছে সেই হারে নতুন ওষুধ তো আর বাজার জুরে থাকবেনা। যার ফলে এক সময় চিকিৎসা করাতে এন্টিবায়োটিক খুজতে সার্চ ইঞ্জিন লাগাতে হবে।
🎯 যক্ষা, নিউমোনিয়া, প্রসাবের ইনিফেকশন এর চিকিৎসা করা মারাত্মক কষ্টকর হচ্ছে, সেই সাথে চিকিৎসার খরচ এবং হাসপাতালে থাকার সময়কাল ও দীর্ঘায়িত হচ্ছে।
🎯সিজারের মতো অপারেশনের ক্ষেত্রে এখন বহুবার ভাবতে হয়, এন্টিবায়োটিক রেজিসট্যান্স নিয়ে।
👉নিম্নের কিছু নমুনা দেখানো হলোঃ
নমুনা গুলো হলো কালচার সেন্সিটিভিটি রিপোর্ট এর।
👉এই টা কি পরীক্ষা? কেনো করা হয়?
🎯এই পরীক্ষার মাধ্যমে দেখা হয় রক্ত বা প্রসাব বা কফ বা অন্যান্য স্যাম্পল যেখানে ইনফেকশন সন্দেহ করা হয় তা কোন ব্যাকটেরিয়া দিয়ে হচ্ছে এবং ওই ব্যাকটেরিয়া কোন এন্টিবায়োটিক দিয়ে মেরে ফেলা যাবে। এতে করে নির্দিষ্ট এন্টিবায়োটিক দিয়ে একটি নির্দিষ্ট ব্যাকটেরিয়া কে মেরে সফলভাবে চিকিৎসা করা সম্ভব।
👉আসুন নিচের এই টাইপ কিছু টেস্ট এর নমুনা দেখি।
নমুনা ১ঃ
✅৬৫ বছরের একজন মহিলা পেসেন্ট ভর্তি ছিলো স্ট্রোক, ডায়াবেটিস, হাই প্রেসার নিয়ে। হঠাৎ করেই কিছুটা খারাপ হতে লাগলো। অবশেষে প্রসাবের ইনফেকশন আসলো, টেস্ট দেয়া হলো। Amikacin আর Meropenem বাদে সব এন্টিবায়োটিক রেজিসটেন্স( R)আসলো। কতটা ভয়াবহ। এই দুই টাও যদি রেজিসট্যান্স হয়ে যায় তবে চিকিৎসা হবে কি দিয়ে?
নমুনা ২ঃ
✅৬০ বছরের এক মহিলা স্ট্রোক, ডায়াবেটিস এর পেসেন্ট, উনার প্রস্রাবের রিপোর্ট। Colistin ও Polymyxin B বাদে সব রেজিসট্যান্স। এতে করে প্রসাবের ইনফেকশন এর চিকিৎসার খরচ ১৪০ টাকা থেকে বেড়ে উঠে গেলো ২৮-৪২ হাজার।
নমুনা ৩ঃ
✅৫০ বছর বয়সের এক মহিলা, ব্রেইনের রক্তক্ষরন, ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ ভুগছিলেন। হঠাত কাশি, শ্বাসকষ্ট। পরীক্ষা করে দেখা গেলো সব এন্টিবায়োটিকস রেজিট্যান্স( R)। এখন এই নিউমোনিয়া এর চিকিৎসা দিবো কিভাবে?
কতটা আনলাকি উনি আর সিচুয়েশন টা কতটা ভয়াবহ!!!!
☠️সত্যিকার অর্থে বলতে গেলে উন্নত দেশে মান্ধাতার আমলের এন্টিবায়োটিক দিয়েই এইসব রুগের চিকিৎসা করা হচ্ছে। আর আমাদের দেশে এইগুলা সেকেলের।
☠️আমারা অযাচিত ব্যবহার করে এইগুলা কে এমন এক জায়াগায় নিয়ে গিয়েছি ব্যাকটেরিয়া মুচকি হাসি দেয়। ভবিষ্যৎ প্রজম্মের জন্যে রেখে যাচ্ছি ভয়াবহ পরিনতি।
📣করনীয়ঃ
খুব সংক্ষেপে বলতে গেলেঃ
১. কখনই ডাক্তার এর পরামর্শ ছাড়া কোন ভাবেই এন্টিবায়োটিক সেবন না করা।
২. কখনোই ডাক্তার কে এন্টিবায়োটিক দেয়ার ডিমান্ড না করা
৩. পুরো এন্টিবায়োটিক কোর্স সম্পন্ন করা
৪. কোয়ার্ক, পল্লী চিকিৎসক, ফার্মেসী ওয়ালাদের চৌদ্দ হাত দূরে থাকবেন। এন্টিবায়োটিক বিক্রিই উনাদের বিজনেস। মানে আপনার শরীর ই তাদের বিজিনেস এর মূল কারখানা।
🌻সবাই ভালো থাকুন। ভালো থাকতে শিখুন।
🌻অন্যকেও ভালো রাখুন।🌻